আমার মেয়ে যে কখন এতো বড় হয়ে গেলো বুঝতেই পারিনি। ও এখন বাঙ্গালোরে। ও নেই
দেখে ওর টেবিল ঘাটতে গিয়ে দেখি ও ওর ডায়েরিটাই ফেলে গেছে। একটা পাতা উল্টে গেলো, আমি চমকে উঠলাম, দেখি আমাকেই লেখা।
বাবা,
তোমাকে আমি কখনও বলিনি, আজ বলছি। আমার তোমাদের কাছে একটা প্রশ্ন আছে. male gaze নিয়ে। তোমাদের, মানে পুরুষমানুষদের কাছে। আমি যখন খুব
ছোট ছিলাম, তখন
থেকেই দেখতাম আমি যখনি বেরোতাম, স্কুলে বা কলেজে যেতাম তখন পাড়ার মোড়ে, বাসে, ট্রামে ছেলেরা বা লোকেরা আমাদের
মেয়েদের দিকে একটা অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে থাকতো, তাদের চাহনি দেখে মনে হতো যেন তারা
যেন চোখ দিয়ে আমার জামাকাপড় খুলে ফেলছে। আমি এই কথা তোমাকে কি করেই বা বলি, তাই ডায়েরিতেই লিখছি। কেন এরকম হবে
বাবা? তুমি
কি কখনো এরকম ভাবে কোনো মেয়েদের দিকে তাকাও? Please তাকিও না।
থেমে গেলাম। আমার মনে আছে আমি এরকম ভাবে তাকানো অপছন্দ করতাম দেখে বন্ধুরা
আমাকে ঠাট্টা করে gay বলতো!
এই ভাবতে ভাবতে আবার ওর লেখাটা পড়তে লাগলাম।
এই gaze টা
এমনিই একটা ভয়াবহ জিনিস যা আমাদের কাছে একটা বিভীষিকা। আমরা যেখানে থাকি ঠিক সেইখানেই ছেলেরা
বসে চা খায় আর জোরে জোরে কথা বলে। আর পাড়া দিয়ে কোন মেয়ে গেলেই
আপাদমস্তক দেখে। আর আমরা যারা dress পরি তাদের দিকে এমন ভাবে তাকায় যে মনে হয় ওরা বলছে, 'আয়, তোকে রেপ করি, ড্রেস পরেছিস যখন তখন নিশ্চই ছুঁকছুঁক
করছিস?' আর
যারা শাড়ি পরে তাদেরও কিন্তু ওরা ছাড়ে না।
আমি জানি বাবা যে এর বিরুদ্ধে কোনো আইন নেই, থাকলেও সেটা কার্যকরী করা সম্ভব না।
যারা এরকম ভাবে না তাকায় তাদের ওরা দলে নেয়না। কিন্তু তাহলে কি করা বাবা, আমরা যে প্রত্যেকদিন ওই চোখের দৃষ্টিতে
গুলিবিদ্ধ হয়ে যাচ্ছি! তুমি জানো, চিত্রার মা একবার ঐসব ছেলেগুলির দিকে উল্টে তাকিয়েছিলো বলে ওর বাবা কি
বলেছে? বলেছে, তোমাদের নত, নম্র হয়ে থাকতে হবে, তোমরা ওই লোকগুলোর দিকে না তাকালেই পার? তুমি কেন ঘুরিয়ে তাকিয়েছো? ওরা তো তাকাবেই নাহলে আর কিসের
পুরুষমানুষ? তুমিও
কি এইরকম ভাব বাবা? তোমার
মনে আছে বাবা আমার যখন ছ' বছর
বয়েস তখন আমি একটা স্কার্ট পড়েছিলাম বলে আমার এক বন্ধুর মা আমাকে কি বলেছিলো? যে আমি কেন এরকম অসভ্যের মতো ড্রেস
করেছি? আর
তাই শুনে তুমি ঝগড়া করেছিলে? Do you remember? আমরা যে কোনো বয়েসেই স্কার্ট পড়লেই আমরা
অসভ্য হয়ে যাই? আর
আমাদের দিকে এরকম দৃষ্টি নিয়ে ওরা তাকায় ওদের পৌরুষ দেখানোর জন্য?
বাবা, তুমি
তো scientist, তুমি আমাদের জন্য please একটা
কিছু ইনভেন্ট করো যাতে আমরা invisible হয়ে যেতে পারি! তুমি কি হাঁসছো ? কিন্তু এটা লিখতে গিয়ে আমি কাঁদছি। I am bleeding from
inside! I feel like Draupadi! লোকেদের এই তাকানো আমরা আর সহ্য করতে পারছিনা বাবা! ওরা পাড়ার মোড়ে কিংবা
বাজারে বসুক, কিন্তু
এরকম ভাবে আমাদের বাজারে যেন না নামিয়ে নিয়ে আসে!
ওর ডায়েরির এই পাতাটা পরে আমার চোখ খুলে গেলো। মেয়ে আমার বড় হয়েছে, অনেক কিছুর মতো এটাও মানিয়ে নিতে হবে, এটা বোধ করি পাল্টানোর নয়, ওকে invisible করে দেবার ক্ষমতাও যে আমার নেই!
বাবা হয়ে নিজেকে এত অসহায় কখনও বোধ করিনি। ওরা কি তবে সত্যিই দ্রৌপদীর মত
মহাভারতের পথে আজও হেঁটে চলেছে?
পরের পাতায় দেখলাম এই নিয়ে ওর লেখা একটা কবিতা।
Male gaze
O Krishna! There is no law that can protect us from male gaze
We feel awkwardly exposed, harassed, and perpetually out of place.
Can you please make us invisible when
We have to face them willy nilly?
Their hungry, hostile gazes so often
Tear us apart, they stare at us and bully,
Like Draupadi, we have tears of terror,
Rolling down our cheeks,
We feel helpless and weak, free us
We feel helpless and weak, free us
Dear God, from this curse.
Disclaimer
আমার মেয়ে আক্ষরিক অর্থে না নিয়ে মেয়ে হিসেবে নেওয়াটাই প্রার্থনীয়।

